রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের নবম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী তাহসান ও তমাকে টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়ে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচির এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো৷ গতকাল সোমবার সকালে (১লা নভেম্বর) ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের এই টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক ৷
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্যসচিব শামসুল বলেন, শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে ফাইজারের টিকা। এই টিকা শীততাপনিয়ন্ত্রিত বুথে দিতে হয়। প্রতি স্কুলে ২৫টি করে বুথ থাকবে। এসব বুথে দিনে চার থেকে পাঁচ হাজার শিশুকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে রাজধানীর আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথম দিন আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে টিকা দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার থেকে টিকা দেওয়া হবে হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, সাউথ পয়েন্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, চিটাগাং গ্রামার স্কুল, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কাকলী স্কুল, মিরপুর কমার্স কলেজ, স্কলাস্টিকা (মিরপুর) ও সাউথ ব্রিজ স্কুলে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী এবং শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ’এর আগে গত ১৪ অক্টোবর মানিকগঞ্জে পরীক্ষামূলকভাবে ১২০ শিক্ষার্থীকে ফাইজারের টিকা দেওয়া হয়। টিকা নেওয়া শিক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা হয়নি। পরবর্তী সময়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের (১২-১৭ বছর) টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
দেশের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে প্রায় ৩ কোটি ডোজ টিকা লাগবে এবং ফাইজারের ৮০ লাখ ডোজের বেশি টিকা রয়েছে দেশে৷ আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স বাংলাদেশকে আরও টিকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য মন্ত্রী৷
দীপু মনি বলেন, ’আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছি, কিন্তু সীমিত আকারে৷ কিন্তু টিকাদান কার্যক্রম যত সফল হবে তত দ্রুত স্কুলে পাঠদান কার্যক্রম চালু করতে পারব৷ আমরা আশা করছি, নতুন বছরের শুরু পর্যন্ত আমরা টিকাদান কার্যক্রমে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারব৷ শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে পারব৷’
টিকা পেতে স্কুল শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করে মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে টিকা নেওয়ার তারিখ ও কেন্দ্রের নাম জানানো হবে এবং টিকা নেওয়ার সময় টিকা কার্ড প্রিন্ট করে সাথে নিয়ে যেতে হবে ৷ শামসুল হক বলেন, ‘নিবন্ধন ছাড়া কোনো শিক্ষার্থী টিকা নিতে পারবে না। টিকা নেওয়ার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা ও জন্মনিবন্ধন নম্বর আইসিটি বিভাগে পাঠাবে। আইসিটি বিভাগ সেটি যাচাই করে সুরক্ষা অ্যাপে দেবে। সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে স্কুল কর্তৃপক্ষ বা শিক্ষার্থীর অভিভাবকেরা টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন। টিকা নেওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের টিকা কার্ড ও জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি সঙ্গে আনতে হবে।’