সৌন্দর্য্যে ভরপুর ডিবির হাওর সিলেটের জৈন্তাপুরে বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত ঘেঁষা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। সিলেট শহর থেকে ডিবির হাওরের দূরত্ব মাত্র ৪২ কিমিটার। ইয়াম, ডিবি, হরফকাটা, কেন্দ্রী বিল নামে এখানে চারটি বিল আছে। বর্ষাকালের পর বিলগুলা শাপলার রাজ্যে পরিণত হয়। তখন সমস্ত বিল জুড়ে হাজার হাজার শাপলা ছড়িয়ে থাকে। হাজারো লাল শাপলা ফুটে আলোকিত করে রাখে চারপাশ। প্রকৃতি যেন আপন মনের মাধুরীতে লাল শাপলার হাসিতে বিলগুলাকে সাজিয়ে দেয় পরম মমতায়। ভ্রমণপিপাসুদের সারাজীবন মনে রাখার জন্য শাপলা বিলে একটি সকালই যথেষ্ট। ডিবির হাওর তাই শাপলা বিল নামেও সবার কাছে পরিচিতি লাভ করেছে। এছাড়া এখানে প্রায় দুইশত বছরের পুরাতন একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দির রয়েছে। কথিত আছে, জৈন্তা রাজ্যের কোন এক রাজাকে ডিবির হাওরে কোথাও পানিতে ডুবিয়ে মারা হয়েছিল। ধারণা করা হয় তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে এ মন্দির নির্মিত হয়েছে। এছাড়াও হরফকাটা ও ডিবি বিলের মধ্যস্থলে রাজা রাম সিংহের সমাধিস্থল রয়েছে। শীতকালে এই হাওর জুড়ে অথিতি পাখিদের় দেখামেলে। তখন সাদাবক, জলময়ুরী ও পানকৌড়ি ইত্যাদি নানা প্রজাতির অতিথি পাখির কলরবে মুখরিত হয়ে থাকে ডিবির হাওরের চারপাশ।
কখন যাবেন
ডিবির হাওরের লাল শাপলা ফুল মূলত সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসে দেখতে পাওয়া যায়। তবে নভেম্বর মাস সবচেয়ে ভাল সময়। আর শাপলার রুপ দেখতে হলে, ভোরে পৌছাতে পারলে ভালো। খুব ভোরে হাজার হাজার শাপলা বিলের জলে নিজেদের মেলে ধরে আপন সৌন্দর্য্যের ঝলকানিতে।
সিলেট থেকে ডিবির হাওর
সিলেট থেকে বাস, সিএনজি অটোরিকশা কিংবা প্রাইভেট কার ভাড়া নিয়ে জৈন্তাপুরে আসতে হবে। সারা দিনের জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশা রিজার্ভ করতে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে। জৈন্তাপুর বাজার থেকে কিছুটা সামনে এগিয়ে গেলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ডিবির হাওর ক্যাম্প চোখে পড়বে। এই ক্যাম্পের পাশ দিয়ে ১ কিলোমিটার দূরত্বে শাপলা বিল । বাসে করে সিলেটের কদমতলী থেকে ডিবির হাওরে আসতে চাইলে ডিবির হাওর ক্যাম্পের সামনে নামলে গ্রামের রাস্তা ধরে মাত্র ১ কিলোমিটার হাটলেই ডিবির বিলে পৌঁছে যাবেন। শাপলা বিলে নৌকায় ঘুরতে চাইলে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা ভাড়া গুনতে হবে।