বিদায় হজ্জে ঐতিহাসিক আরাফার ময়দানে হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম যে ভাষণ দিয়েছিলেন তার মধ্যে একটি বাক্য এমন বলেছেন যে যুগ যুগ ধরে ইসলামী জীবন বিধানকে সকল বিকৃতির হাত থেকে রক্ষা করছে। সেই ঐতিহাসকি বাক্যটি হল :- “আমি তোমাদের মাঝে দুটি জিনিস রেখে গেলাম যতদিন তোমরা সে দুটি জিনিস আঁকড়ে ধরে থাকবে কেউ তোমাদেরকে পথভ্রষ্ট করতে পারবে না। তার একটি হল আল্লাহর কিতাব আল-কুরআন এবং অন্যটি আমার সুন্নাহ- আল হাদীস।”
সাহাবীদের মধ্যে অসংখ্য সাহাবী কুরআনকে মুখস্থ করে হাফেজে কুরআন ছিলেন। পরবর্তীতে হাদীস সংগ্রহ করার সময় হাদীস মনে রেখেছিলেন এমন অসংখ্য সাহাবী পাওয়া গেছে। তারা হাদীস বর্ণনাকারী হিসেবে হাদীসের ইতিহাসে অম্লান হয়ে আছেন। হাদীস সংগ্রহ করার জন্য সাহাবীদের ত্যাগ অবর্ণনীয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেননি তা বলার পরিণতি হল নিজের বাসস্থান জাহান্নামে নির্ধারণ করে নেয়া। একথা স্মরণ রেখে সাহাবায়ে কেরাম অত্যন্ত সতর্কতার সাথে হাদীস বর্ণনা করেছেন। হাদীস বর্ণনাকারীদের ত্যাগ ও কুরবানীর কথা স্মরণ হলে শরীর শিহরিয়ে উঠে। দু’চোখের পানি সংবরণ করা যায় না। এখানে সাতজন হাদীস বর্ণনাকারীর নাম দেয়া হল যাদের হাদীস বর্ণনার সংখ্যা এক হাজারের বেশী ।
(১) হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা ৫৩৭৪টি।
২) হযরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা ২২৬০টি।
(৩) হযরত আয়েশা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা ২২১০টি।
(৪) হযরত আবদুল্লাহ বিন ওমর (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা ১৬৩০টি।
(৫) হযরত জাবের বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা ১৫৪০টি।
(৬) হযরত আনাস বিন মালিক (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা ১২৮৬টি ।
(৭) হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা ১১৭০টি।
উপরোল্লিখিত সাহাবায়ে কেরাম একদিকে যেমন হাদীস সংরক্ষণে ভূমিকা রেখেছেন অন্যদিকে ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠার কাজে তাদের অবদান অতুলনীয়। তাদের সম্পর্কে বলা একটি প্রসিদ্ধ কথা হল, হুম ফিল লাইলে রুহবান অফিন্নাহারে ফুরসান’ তারা রাতের বেলায় নামাজে দাঁড়িয়ে চোখের পানিতে ভিজায় ও তারা দিনের বেলায় ঘোড়ার পিঠে জিহাদের ময়দানে ঘাম ও রক্ত ঝরায়। তাদের জীবনী থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে শিক্ষাগ্রহণের তৌফিক দিন। আমীন!!