ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামে একটি লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৩৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে। লঞ্চটি প্রায় ৮০০ যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশে রওনা হওয়ার পথে ঝালকাঠিতে ওই দুর্ঘটনার শিকার হয়। এ ঘটনায় দগ্ধ প্রায় ৭৫ জনকে বরিশালের শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ১৫ জনকে ভর্তি করা হয়েছে।
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হতাহতদের খোঁজে নদীর পাড় ও হাসপাতালে ভিড় করছেন স্বজনেরা। এ সময় প্রিয়জনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠছে সেখানকার পরিবেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ঝালকাঠি সদরের দিয়াকুল গ্রামের কাছে সুগন্ধা নদীতে লঞ্চটিতে আগুন লেগে যায়।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ তিনি লঞ্চের ভিআইপি কেবিনের নীলগিরির যাত্রী ছিলেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় লঞ্চ থেকে লাফিয়ে বাঁচার সময় তার স্ত্রী উম্মুল ওয়ারার ডান পা ভেঙে গেছে। বর্তমানে তারা ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মোহাম্মদ আল মুজাহিদ জানান, ঢাকা থেকে অফিশিয়াল কাজ শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় লঞ্চে বরগুনার উদ্দেশে যাত্রা করেন। রাত ৩টার দিকে লঞ্চে অন্য যাত্রীদের চিৎকারে তার ঘুম ভাঙে। তখন লঞ্চ ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন ছিল। এরপর তড়িঘড়ি করে বের হয়ে লঞ্চের সামনে থেকে চলে যান।
তিনি আরও জানান, লঞ্চে থাকা বৃদ্ধ এবং শিশুরাই বেশি হতাহত হয়েছেন। এছাড়া লঞ্চে অনেক নারী ছিলেন যারা নদীতে লাফিয়ে পড়েছেন, কিন্তু তীরে উঠতে পেরেছেন কিনা এ নিয়ে সংশয় রয়েছে।
লঞ্চটি এ সময় সুগন্ধা নদীর মাঝখানে অবস্থান করছিল। অনেককেই নদীতে লাফিয়ে বাঁচতে চেষ্টা করতে দেখা গেছে বলে জানান তিনি। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন লঞ্চ থেকে তারাও লাফ দিলে তৃতীয় তলা থেকে দোতলায় পড়ে যান। তখন তার স্ত্রী উম্মুল ওয়ারার ডান পা ভেঙে যায়। এরপর স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।