মাছের কৃত্রিম প্রজননে রেণু পোনা উৎপাদনে উদ্দীপক হিসেবে প্রাকৃতিক হরমোন ব্যবহার করা হয়। এ ক্ষেত্রে মাছের মুণ্ডু তথা মুড়ার দানা বা পিটুইটারি গ্লান্ড (পিজি) প্রাকৃতিক হরমোন হিসেবে ব্যবহার করা হয় । এর প্রতি কেজির দাম ৬০ থেকে ৯০ লাখ টাকা। দেশে বছরে পিজির চাহিদা ৫০ কেজি। যদিও ১৫ কেজির মতো কৃত্রিম পিজি ব্যবহার হয়। এর প্রতি কেজি ২৭ থেকে ২৮ লাখ টাকা।
বাংলাদেশে পিজি সংগ্রহ থেকে শুরু করে তা প্রয়োগ করা পর্যন্ত একটি বাজারব্যবস্থা গড়ে উঠেছে যশোর, খুলনা, ময়মনসিংহসহ কয়েকটি জেলায়। এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত রয়েছেন বাজারে মাছ কাটার বঁটি-ওয়ালা, পিজি সংগ্রাহক, প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান ও হ্যাচারিমালিকরা। ভেজা পিটুইটারি গ্লান্ডও (পিজি) ব্যবহার করা যায়। তবে শুকনা পিজি ব্যবহার করলে মাছের পোনা উৎপাদন প্রায় ৩০ থেকে ৫০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। কার্পজাতীয় মাছের মধ্যে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউশ, কার্ফু, কার্ভ, সিলভার কার্প এর মুড়ার দানা বেশি দামি।
আলিবাবা ও মেড ইন চিনা নামে আরেক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে দেখা গিয়েছে, প্রতি গ্রাম পিজির দাম ছিল ৮০ থেকে ১১০ মার্কিন ডলার। এর মানে প্রতি কেজির দাম ৬৮ লাখ থেকে ১ কোটি ৩ লাখ টাকা (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ধরে)।
এ ব্যবসায় জড়িত স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পিজি নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ডফিশ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশের বাজারে প্রতি গ্রাম পিজি মানে মুড়ার দানা ৬ থেকে ৯ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। সেই হিসাবে এক কেজির দাম ৬০ লাখ থেকে ৯০ লাখ টাকা। আর দেশে বছরে প্রায় ৫০ কেজি পিজির চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে শুকনা পিজি পাওয়া যায় ৭ থেকে ৮ কেজি। বাকি ৪২ কেজির সিংহভাগই প্রতিবেশী ভারত এবং কিছুটা চীন থেকে আমদানি করা হয়। আর বিশ্বে পিজির মোট চাহিদা এক হাজার কেজি। তবে ২২টি দেশে এটির চাহিদা বেশি। দেশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ব্রাজিল, রাশিয়া, ইউক্রেন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ভেনিজুয়েলা, কাজাখস্তান, মিসর ও টোগো।
ওয়ার্ল্ডফিশের বাজারব্যবস্থা উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ হাসনাল আলম বলেন, “মাছের কৃত্রিম প্রজনন করা হলে একটা না একটা উদ্দীপক লাগেই। যদি প্রাকৃতিক পিজির ব্যবস্থা করা না যায়, তাহলে কৃত্রিম পিজি ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু কৃত্রিম পিজি মাছের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।”