ভূমি মন্ত্রণালয়ের নতুন ভূমি আইন ২০২৩ একটি দেশ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য অনেক আইন প্রণয়ন করতে হয়। এরই লক্ষ্য অনুযায়ী অবশ্যই বাংলাদেশের একটি ভূমি আইন প্রচলিত রয়েছে বর্তমানেও। কিন্তু ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ আইন ২০২৩’ নামে নতুন একটি আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে বর্তমান ভূমি মন্ত্রণালয়। মূলত এই আইনটি ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন অপরাধ প্রতিরোধ করায় প্রধান লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন ভূমি মন্ত্রী জনাব সাইফুজ্জামান চৌধুরী সাহেব। এই আইনটিতে বলা হয়েছে যে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য যদি কেউ সরকারি কিংবা বেসরকারি জমি জাল দলিলের মাধ্যমে নিজের নামে লিখে নেন বা দখল করে নেন তাহলে তাকে অবশ্যই অনধিক দুই বছর এবং কমপক্ষে ছয় মাসের জেল বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। তাই বলা যায় যে বর্তমান এই ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ আইন ২০২৩ কার্যকর করার ফলে ভূমি সংক্রান্ত অনেক ধরনের অপরাধ কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। আবার আরেকটি জায়গায় বলা হয়েছে যে দাতার মালিকানা ও দখল না থাকা সত্ত্বেও কেউ যদি অতিরিক্ত জমি লিখে নাই তাহলে তার দুই থেকে পাঁচ বছরের জেল এবং তিন থেকে দশ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে যদি কেউ উত্তরাধিকারীকে বঞ্চিত করে নিজের প্রাপ্যতার বাইরে বেশি জমি নিজের নামে দলিল করে নেন তাহলে তাকে অবশ্যই অনধিক দুই বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। আবার কেউ যদি একক বা দলগত ভাবে অবৈধ উপায়ে ভূমির দখল নেন এবং দখল বজায় রাখতে অস্ত্র প্রদর্শন বা ব্যবহার করে থাকেন তাহলে তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে এবং এই অপরাধ জামিনে অযোগ্য বলে গণ্য করা হবে। উল্লেখ রয়েছে আইনটিতে জালিয়াতি ও প্রতারণামূলক বেশ কিছু অপরাধকে জামিন অযোগ্য করা হয়েছে। তাই বর্তমানে ভূমি নিয়ে বর্তমান সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। ভূমি ব্যবস্থাপনার আধুনিক করার লক্ষ্যে ভূমি সংক্রান্ত সকল বিষয়ে অবশ্যই বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় ভূমি অফিসকে ব্যাপকভাবে ঢেলে সাজিয়েছেন। তারা ভূমি অফিসের বিভিন্ন পরিষেবা গুলিকে অনলাইনের মাধ্যমে সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন। তাই বর্তমানে আর ভূমি অফিসের সেবা গুলি পেতে ভূমি অফিসে গিয়ে সেবা গ্রহণ করতে হয় না। বাড়িতে বসেই আপনার ডিভাইসের সাহায্যে আবেদন করলেই বা আপনার মোবাইল ফোনের সাহায্যে বাংলাদেশ ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলেই এর সংক্রান্ত অর্থাৎ সেবা সংক্রান্ত সকল বিষয়গুলি বুঝে নেওয়া যায় এবং সেবাও পাওয়া যায়। তাই বাংলাদেশের বর্তমান ভূমি সংস্কার আইন ২০২৩ নীতিগতভাবে অনুমোদের জন্য শিগ্রই মন্ত্রিসভায় উত্থাপিত হবে। প্রস্তাবিত আইনের প্রধান লক্ষ্য কৃষি জমি সুরক্ষা করে ভূমির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা। এবং এই আইন অনুযায়ী ব্যক্তি এবং পরিবার পর্যায়ে কেউ সার্বিকার বেশি কৃষি জমির মালিকানা রাখতে পারবেন না। ক্রয় সূত্রে কারো মালিকানার এর চেয়ে বেশি জমি থাকলে তা সরকারের কাছে সমর্পণ করতে হবে। তবে আরেকটি বিষয় হলো যে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হলে ৬০ বিঘার অতিরিক্ত কৃষি জমি সংশ্লিষ্ট মৌজা মূল্যে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিয়ে সরকারের অনুকূলে খাস করে নেওয়া যাবে। তাই শিল্প কারখানা স্থাপনের ক্ষেত্রেও আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা শিথিল করার বিধান রাখা হয়েছে। তাই বলা যায় যে ভূমি সংস্কার আইন নামে যে আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে সেটি অবশ্যই একটি ভালো বিষয় বলে মনে করা হয়। তাই বর্তমান ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওপর বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগণের আস্থা বেড়ে যাওয়ার কারণে তারাও অবশ্য যতভাবে উন্নতি করা হয় বা ভূমি সংস্কার আইন যত ভাবে উন্নতি করা সম্ভব সকল বিষয়ে তারা দেখে বিবেচনা করে এ সংক্রান্ত আইন পাশের ব্যবস্থা করছেন। নতুন আইন ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা ও ভূমি অপরাধ প্রবণতা হ্রাস করবে বলে মনে করছেন সংকলিষ্টরা।