বিশ্বজুড়ে আলোচনা চলছে ইসরায়েলি এনএসও গ্রুপের তৈরি করা পেগাসাস স্পাইওয়্যারসফটওয়্যার নিয়ে। আইওএস বা অ্যান্ড্রয়েডে চলে এমন ফোনে নজরদারি চালানোর ক্ষমতা এই পেগাসাস সফটওয়্যারে রয়েছে।
পেগাসাস একবার আপনার ফোনে ঢোকার পথ করে নিতে পারলে, সফটওয়্যারটি আপনার অগোচরে ফোনকে ২৪ ঘণ্টার এক নজরদারির যন্ত্রে পরিণত করবে । ফোনে যত মেসেজ আসুক বা পাঠানো হোক, পেগাসাস তা কপি করে পাঠিয়ে দিবে নির্দিষ্ট জায়গায়। এমনকি ফোনে থাকা ছবিও পাঠিয়ে দিবে । এই সফটওয়্যার ফোন কল রেকর্ড করতে পারে, শুধু তাই নয়, ফোনের ক্যামেরা ব্যবহার করে গোপনে আপনার ভিডিও ধারণ করতে পারে। হাতের কাছে ফোন রেখে কারও সাথে কথা বলছেন,পেগাসাস আপনার ফোনের মাইক্রোফোনকে জাগিয়ে তুলে আপনার অজান্তেই সেই আলাপ রেকর্ড করে ফেলতে পারে।

২০১৬ সালে গবেষকরা জানতে পারেন পেগাসাসের প্রথম দিককার একটি সংস্করণের কথা। সে সময় নির্দিষ্ট ব্যক্তির ফোনে টেক্সট মেসেজ বা ইমেইলে পাঠানো হত, যাতে থাকত কোনো লিংক। সেই লিংকে ক্লিক করলেই ফোনের দখল নিত পেগাসাস।
তবে সেই সময়ের তুলনায় এনএসও তাদের এই নজরদারির যন্ত্রের অনেক উন্নয়ন ঘটিয়েছে। এখন ক্লিক না করলেও সফটওয়্যারের ত্রুটি বা বাগ ব্যবহার করে ফোনে ঢুকে পড়তে পারে।
বর্তমান সময়ে অ্যাপলের আইমেসেজ সফটওয়্যারের ত্রুটি ব্যবহার করে স্পাইওয়্যার পাঠানো শুরু করে এনএসও। তবে অ্যাপল বলছে, এ ধরনের হ্যাকিং ঠেকাতে তারা সবসময় তাদের সফটওয়্যার আপডেট করে যাচ্ছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বার্লিন ভিত্তিক সিকিউরিটি ল্যাবের গবেষক ক্লডিও গুয়ারনিয়েরি পেগাসাস কীভাবে কাজ করে, কোনো ফোনে আক্রমণ করার পর সেখানে কী ধরনের চিহ্ন থেকে যায়, তা বোঝার জন্য কাজ করেছেন।
ক্লডিও গুয়ারনিয়েরি ভাষ্যমতে, “যখনই আমরা কোনো ফোনের ফরেনসিক পরীক্ষা করি, প্রায় প্রতি ক্ষেত্রেই একটি প্রশ্ন আমাদের শুনতে হয়, কী করলে ভবিষ্যতে আবারও এরকম হ্যাকিং ঠেকানো যাবে। সত্যি কথা বলতে কি, এর কোনো উপায় নেই।”
গবেষকদের ধারণা, পেগাসাসের নতুন সংস্করণ ফোনের হার্ড ড্রাইভের বদলে বাসা বাঁধছে শুধু অস্থায়ী মেমোরিতে। ফলে ফোনের পাওয়ার বন্ধ করে দিলে দৃশ্যত ওই স্পাইওয়্যারের আর কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না।