Monday, October 14, 2024
No menu items!
জাতীয়পদ্মা সেতুর 'এক বছর ', দৈনিক গড় আয় বেড়ে ২ কোটি ১৮...

পদ্মা সেতুর ‘এক বছর ‘, দৈনিক গড় আয় বেড়ে ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের সাথে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের স্বস্তির যাত্রায় বাংলাদেশর সবচেয়ে বৃহৎ এবং অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হিসেবে ঠিক এক বছর আগে উদ্বোধন করা হয় স্বপ্নের পদ্মাসেতু। পদ্মাসেতু বর্তমান সরকারের একটি বড় সাফল্য অর্জন করেছে। পদ্মা সেতুর একবছরে আয় প্রায় ৮’শ কোটি টাকা। রোববার সেতু ভবনের সম্মেলনকক্ষে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পদ্মা সেতু কোনো সরকার বা দলের সম্পদ নয়, এটি জাতির সম্পদ। এটি সংরক্ষণের দায়িত্ব সবার। ২০২২ সালের ২৫ জুন থেকে গতকাল ২৪ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত পদ্মা সেতু দিয়ে ৫৬ লাখ ৭৫ হাজার যান চলাচল করেছে। এসব যান চলাচল থেকে মোট আয় হয়েছে ৭৯৮ কোটি ২৩ লাখ ৯৬ টাকা। বিকাল নাগাদ এটি ৮০০ কোটিতে উন্নীত হবে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু দিয়ে দৈনিক গড়ে সাড়ে ১৫ হাজার গাড়ি চলাচল করছে। এ থেকে প্রতিদিন গড়ে আয় হয় ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত পদ্মা সেতু থেকে এরই মধ্যে সুফল ভোগ করছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের প্রায় তিন কোটি মানুষ, সর্বোপরি সারা দেশের মানুষ। পাল্টে গেছে অর্থনৈতিক চিত্র। নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যে।পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণের তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির ৩১৬ কোটি দুই লাখ ৬৯ হাজার ৯৩ টাকা পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত ৫ এপ্রিল পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির ৩১৬ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার ৫০ টাকা পরিশোধ করা হয়। দুই দফায় ৬৩২ কোটি ৯৩ লাখ ৬৬ হাজার ১৪৩ টাকা পরিশোধ করা হলো।সেতু বিভাগের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতিদিন গড়ে পাড়ি দিয়েছে সাড়ে ১৫ হাজারের কিছু বেশি যানবাহন। আর দৈনিক গড়ে আদায় হয়েছে ২ কোটি ১০ লাখ টাকার বেশি টোল। গত ২০ এপ্রিল সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পর বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যা। আদায় হচ্ছে বাড়তি টোল। ২০০১ সালের ৪ জুলাই পদ্মা সেতু নির্মাণে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর নানা পটপরিবর্তনের কারণে থেমে যায় পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কাজ। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেতু নির্মাণের কাজ আবারও শুরু হয়।যে দেশে সত্তরের দশকেও শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করত, বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল ছিল দেশ, সেই দেশ এখন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু এবং এর সংযোগ সড়ক নির্মাণের বিশাল কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন করেছে। এটা গৌরববোধ ও আভিজাত্যের অনন্য অহংকার। বিশ্ব বাংলাদেশকে যে চোখে দেখত, এখন সেই চোখে দেখার দিন ফুরিয়ে গেছে। বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিক সক্ষমতার দেশ। প্রতিটি অঙ্গনে অপ্রতিরোধ্য গতিতে উন্নতি ও অগ্রগতি সাধন করে চলেছে বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ ১৯৭৩-৭৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের ৪৮ শতাংশ মানুষ ছিল হতদরিদ্র। আর বর্তমানে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ২০.৫ শতাংশ, যা ২০১৫ সালেও ছিল ২৮.৫ শতাংশ। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় দুই হাজার ৭৬৫ মার্কিন ডলার, যা নিকট-ভবিষ্যতে আমাদের সুনিশ্চিতভাবেই মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করবে। এদিকে, উদ্ধোধনের পর এক মুহূর্তের জন্যও পদ্মা সেতুতে বন্ধ ছিল না যানচলাচল। এ সেতু দিয়ে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ গন্তব্যের পথে ছুটে চলেছেন অবিরাম গতিতে। স্বপ্নের সেতু দিয়ে চলাচল করতে পেরে উচ্ছ্বসিত এই পথের যাত্রী, চালকসহ সংশ্লিষ্টরা। ভোগান্তির দৃশ্যপট পরিবর্তন করে স্বস্তির যাত্রা তৈরির জন্য তারা ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য