বুধবার মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের বে ওভালে ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিনে স্বাগতিক কিউইদের ৮ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এটাই তাদের প্রথম জয়। দুই ম্যাচের সিরিজে তারা এগিয়ে গেছে ১-০ ব্যবধানে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে এর আগে ৩২ ম্যাচ খেললেও বাংলাদেশের নামের পাশে ছিল না কোনো জয়। প্রতিটিতেই মাঠ ছাড়তে হয়েছিল হারের হতাশা নিয়ে। এবার সেই ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙার পাশাপাশি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাধারীদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয়ের মধুর অভিজ্ঞতা হয়েছে বাংলাদেশের।
সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মোস্তাফিজুর রহমানের মতো তারকা নেই এবারের নিউজিল্যান্ড সফরের টেস্ট দলে। অবসরে গেছেন আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাদের অনুপস্থিতিতে কঠিন কন্ডিশনে শক্তিশালী একটি দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের ভালো কিছু করার সম্ভাবনা খুব কম লোকই দেখছিলেন। তবে তারুণ্যের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে টাইগাররা উপহার দিয়েছে অসাধারণ নৈপুণ্য, উপহার দিয়েছে দলগত পারফরম্যান্স। গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন ম্যাচসেরা ইবাদত হোসেন, মাহমুদুল হাসান জয়, লিটন দাস, শরিফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন ও অধিনায়ক মুমিনুল।
মুশফিকুর রহিম চার মেরে স্মরণীয় জয় নিশ্চিত করার পর টেলিভিশন ধারাভাষ্যকারের তাসকিন বলেন, বিশ্বাসই হচ্ছে না তার, ‘এটা অবিশ্বাস্য। আমরা গত পাঁচ দিনে সবকিছু নিংড়ে দিয়েছি। এটি আমাদের জন্য একটি অসাধারণ অর্জন।’ আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে উইকেটরক্ষক-ব্যাটার লিটন বলেছিলেন, সম্ভাব্য জয়ের রোমাঞ্চের জোয়ারে তারা ভেসে যাচ্ছেন না। নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেট পাওয়া তাসকিনও একই সুরে জানান, প্রক্রিয়া অনুসরণের দিকেই মনোযোগ ছিল তাদের, ‘আমরা ফলাফল সম্পর্কে চিন্তা করিনি। আমরা কেবল প্রক্রিয়া অনুসরণ করে গিয়েছি। আমরা আমাদের ১১০ ভাগ দিয়েছি।’
এবাদতের নৈপুণ্যে চতুর্থ দিনের শেষ ঘণ্টায় বাংলাদেশের জয়ের মঞ্চ প্রস্তুত হতে শুরু করে। ইতিহাসের সাক্ষী হতে বেশ কিছু প্রবাসী দর্শক এদিন সকালে হাজির হন বে ওভালে। তাদের কণ্ঠে ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে গ্যালারি। দেশ থেকে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে ভক্তদের সমর্থন পাওয়া নিয়ে তাসকিন বলেন, ‘এখানে এমন সমর্থন পাওয়াটা দারুণ ব্যাপার। আমরা নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে অনেকগুলো ম্যাচ খেলেছি কিন্তু এখানে এটাই আমাদের প্রথম জয়।’