মেঘালয়ের খাসিয়া জৈন্তা পাহাড় আর জাফলংয়ের বুক চিরে বয়ে গেছে ধলাই ও পিয়াইন নদী। সত্যি অসাধারণ পিয়াইনের স্বচ্ছ জলে সাজানো নানা রঙের নুড়ি পাথর ও উত্তোলনের দৃশ্য। নদীর তীরেই গড়ে উঠেছে খাসিয়াপুঞ্জি। দূর থেকে দেখলে মনে হয় আকাশের গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে পাহাড়। পাহাড়ের গায়ে নরম তুলার মতো ভেসে বেড়াচ্ছে মেঘরাশি। সংগ্রামপুঞ্জি, চা বাগান, রাজার বাড়ি, পান-সুপারির বাগান বা ঝরনার রোমাঞ্চ উপভোগ করতে হলে নদীর ওপারে ছোট্ট বাজার পেরিয়েই অটো রিজার্ভ করে নিতে হবে।
খাসিয়াদের গ্রামকে বলা হয় পুঞ্জি। নদী পার হলেই খাসিয়াপুঞ্জি। এই পুঞ্জিগুলোতে গেলে দেখা যাবে ৩-৪ ফুট উঁচুতে বিশেষভাবে তৈরি খাসিয়াদের ঘর। প্রতিটি বাড়িতে রয়েছে পানবরজ। জাফলংয়ে খাসিয়া সম্প্রদায়ের পাঁচটি পুঞ্জি রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- বল্লা, সংগ্রামপুঞ্জি, নকশিয়াপুঞ্জি, লামাপুঞ্জি ও প্রতাপপুর। পাঁচটি পুঞ্জিতে প্রায় আড়াই হাজার খাসিয়া সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করে।
জাফলংয়ের পিয়াইন নদী পার হয়েই শুরু হয়েছে একটি বাজার; তারপর সংগ্রামপুঞ্জি, সুপারি বাগান, খাসিয়া রাজার বাড়ি ও এ সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি-জীবনযাত্রা দেখতে দেখতে আঁকাবাঁকা সরুপথ দিয়ে বাংলাদেশের সমতল ভূমিরচোখ জুড়ুনো চাবাগান ।
খাসিয়াদের ঐতিহ্য হচ্ছে পান ও সুপারির চাষ করা। সংগ্রামপুঞ্জির বুক চিরে যাওয়া রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে দেখা যায় পান-সুপারির সারি সারি বাগান । সবুজের মাঝে পাখ-পাখালির ডাকাডাকি আপনাকে মুগ্ধ করবে। খাসিয়াদের বাড়িঘর মাচাংয়ের মতো, দোতলা ধচের বাড়ি। এরা শৃঙ্খলায় বিশ্বাসী। প্রতিটি বাড়ি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন। পরিবারের পুরুষ সদস্যরা দিনভর গাছ থেকে পান আহরণ করেন। আর মহিলারা সেগুলো কুচি করেন।খাসিয়াদের পান পাতা সংগ্রহ ও খাঁচা ভর্তির দৃশ্যও মুগ্ধ করে পর্যটকদের।
জাফলংয়ের সৌন্দর্যে আলাদা মাত্রা যোগ করেছে খাসিয়া আদিবাসীদের জীবনধারা।