গতকাল সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাত নয়টায় রাজশাহী শহরে নিজ বাসভবনে হাসান আজিজুল হক মারা যান। ৮২ বছর বয়সী হাসান আজিজুল হক বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। গত ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই সপ্তাহের বেশি সময় চিকিৎসা নেন এবং কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর ৯ সেপ্টেম্বর তাঁকে রাজশাহীতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। সেখানে বাসায় রেখেই তার চিকিৎসা চলছিল। রাত ৯টায় হাসান আজিজুল হকের মৃত্যু হয় বলে সাবেক সহকর্মী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক হাসান আজিজুল হকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাসান আজিজুল হক তাঁর সাহিত্যকর্ম ও সৃজনশীলতার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে এক সম্ভ্রান্ত এবং একান্নবর্তী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কথাসাহিত্যক হিসেবে পরিগণিত। ষাটের দশকে আবির্ভূত এই কথাসাহিত্যিক তাঁর গদ্য এবং মর্মস্পর্শী বর্ণনাভঙ্গির জন্য প্রসিদ্ধ। জীবনসংগ্রামে লিপ্ত মানুষের কথকতা তার গল্প-উপন্যাসের প্রধানতম অনুষঙ্গ। রাঢ়বঙ্গ তাঁর অনেক গল্পের পটভূমি। আগুনপাখি (২০০৬) হক রচিত প্রথম উপন্যাস। তিনি ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদকে ও ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে। এই অসামান্য গদ্যশিল্পী তার সার্বজৈবনিক সাহিত্যচর্চার স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে “সাহিত্যরত্ন” উপাধি লাভ করেন।