Saturday, February 15, 2025
No menu items!
প্রথম পাতাএকসঙ্গে এসএসসি পাস করলেন মা-ছেলে

একসঙ্গে এসএসসি পাস করলেন মা-ছেলে

ছোট থেকেই লেখাপড়ায় বেশ আগ্রহ ছিল লিপি আক্তারের। স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে স্বাবলম্বী হবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়ায় দারিদ্রতা। এসএসসি পাসের আগেই ২০০২ সালে উপজেলার সোনাপুর গ্রামের লোকমান হোসেনের সঙ্গে শুরু হয় তার সংসার জীবন।

বিয়ের কয়েকবছর পর স্বামীর উৎসাহে আবারও স্কুলে ভর্তি হন লিপি আক্তার। সংসার, দুই মেয়ে আর এক ছেলের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি চককালিকা পুর কারিগরি স্কুলে নিয়মিতই পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু নবম শ্রেণিতে উঠতেই স্বামীর অকাল মৃত্যুতে আবারও ভেঙে যায় সেই স্বপ্ন।

পরবর্তীতে ছেলে-মেয়ের অনুরোধে আবারও পড়ালেখা শুরু করেন হাসি। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছর ছেলের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন লিপি আক্তার। ফলাফলে মা লিপি আক্তার হাসি (৪০) পেয়েছেন জিপিএ-৪.৫৪ এবং ছেলে লিয়াকত হোসেন হৃদয় (১৬) পেয়েছে জিপিএ-৫।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ফল প্রকাশের পর মা-ছেলের সাফল্যের বিষয়টি প্রকাশ পায়। ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলার চামারী ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য লিপি আক্তার হাসি বলেন, ২০২৩ সালে ড্রেস মেকিং ট্রেড থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি আশা ছিল এ প্লাস পাওয়ার তার পরেও ৪.৫৪ পয়েন্ট পেয়ে আমি অনেক খুশি।

লিমা খাতুনের তিন সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে এসএসসি পাস করে কলেজে আর ছোট মেয়ে লিজা খাতুন নবম শ্রেণিতে। ছেলে লিয়াকত হোসেন গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে এ প্লাস পেয়েছেন।

ছেলে লিয়াকত হোসেন বলেন, আমাদের মানুষ করতে মা অনেক পরিশ্রম করেন পাশাপাশি পড়া লেখা করে পাস করেছেন। আমরা সন্তান হিসেবে মায়ের এমন সাফল্যে বেশি গর্বিত।

লিপি আক্তার বলেন, আমিও ছেলের সঙ্গে পাস করতে পেরে খুব আনন্দিত। তবে স্বামী বেঁচে থাকলে বেশি খুশি হতেন। আগামীতে সন্তানদের পাশাপাশি আমিও পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চাই।

সোনাপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোশারফ হোসেন বলেন, লিপির এমন সাফল্য এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আমরা এলাকার পক্ষ থেকে তার ভবিষ্যতের জন্য উজ্জ্বল সফলতা কামনা করি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে জনপ্রিয় খবর

সাম্প্রতিক মন্তব্য