ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল মিউজিয়াম ছিল ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বাসভবন। পরে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়। জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের দুর্লভ ছবি, নেহেরু-গান্ধী পরিবারের ব্যক্তিগত মুহূর্ত এবং তার শৈশবের সংগ্রহ দেখতে পাবেন এখানে।
ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধী ছিলেন একজন ভারতীয় রাজনীতিবিদ এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব। তিনি ভারতের ৩য় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং তিনি ছিলেন ভারতের প্রথম এবং আজ পর্যন্ত একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী। তিনি ১৯৬৬ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ ১৯৭৭ পর্যন্ত এবং আবার ১৯৮০ সালের জানুয়ারি থেকে ১৯৮৪ সালের অক্টোবরে তার হত্যার আগ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, তাকে তার বাবার পরে দ্বিতীয় দীর্ঘতম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধীর প্রিয়দর্শিনী নামটি দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯১৭ সালের ১৯ নভেম্বর এলাহাবাদে এক কাশ্মীরী পণ্ডিত পরিবারে ইন্দিরা গান্ধীর জন্ম। তাঁর পিতা জওহরলাল নেহেরু ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক অগ্রণী ব্যক্তিত্ব, যিনি পরবর্তীকালে ভারতীয় অধিরাজ্য (ও পরে প্রজাতন্ত্রের) প্রথম প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।
নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। তিনি প্রায় এক কোটি বাংলাদেশী শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। তিনি বিভিন্ন কূটনৈতিক প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে মুক্তিযুদ্ধে সাহস জুগিয়েছেন। ইন্দিরা গান্ধী রিচার্ড নিক্সনকে ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১ সলে লিখা একটি চিঠিতেও বাংলাদেশের পক্ষে কথা উঠে আসে। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী গণহত্যা শুরু করলে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। গণহত্যা শুরুর মাত্র ১ দিন পর ২৭ মার্চ শনিবার ইন্দিরা গান্ধী গণহত্যার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা করেন। এর ৩ দিন পর ৩১ মার্চ ভারতের লোকসভা বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন জানায়। ৪ এপ্রিল তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে বৈঠককালে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন ইন্দিরা গান্ধী।
বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদানের জন্য ভারতের ভূমিকাকে কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে বাংলাদেশ। স্বাধীনতাযুদ্ধে অবদানের জন্য ২০১২ সালে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মাননা জানানো হয় ৮৩জন বিদেশি নাগরিককে, যাদের মধ্যে ৩১জন ভারতীয় ছিলেন। ইন্দিরা গান্ধীকে মরণোত্তর সম্মাননা জানানোর মধ্য দিয়ে সে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছিল।
ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল মিউজিয়াম খোলার সময়, প্রবেশের সময় এবং ফি বিশদ
সারা বছরেই ঘুরতে যেতে পারবেন। সাপ্তাহিক বন্ধের দিন সোমবার । প্রতিদিন সকাল ৯.৩০ থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। মিউজিয়ামে ঢুকতে ফি লাগে না। ছবি ও ভিডিও ধারণে নেই কোন বাঁধা।
ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল মিউজিয়াম এর নিকটতম বিমানবন্দর ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন নতুন দিল্লি, নিকটতম মেট্রো স্টেশন লোক কল্যাণ মার্গ।